পুঞ্চায় তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল, শক্তি প্রদর্শনে সভা করলেন সুজয় ব্যানার্জী।
পুঞ্চা কিষান মান্ডিতে সভা করলেন তৃণমূল নেতা সুজয় ব্যানার্জী। গোষ্ঠী কোন্দল, দলীয় নেতৃত্ব, ও নিজের অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যেই হুঙ্কার দেন তিনি। পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন।💥🗣️
🔰 নেতা-জনগণের সম্পর্কের বার্তা 💬
"মাছ জল ছাড়া বাঁচে না, নেতা জনগণ ছাড়া থাকে না!" — এই কোটেশন দিয়ে নিজের বক্তব্য শুরু করেন তৃণমূল নেতা ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি সুজয় ব্যানার্জী। শনিবার বিকেলে পুঞ্চার কিষান মান্ডির সভাতে তিনি দলীয় কোন্দল ও নিজের অবস্থান নিয়ে খোলাখুলি বলেন।
🚩 দলীয় কর্মীদের জমায়েত ও মিছিলের বার্তা 🚶♂️🚩
সুজয় ব্যানার্জীর ডাকে পুঞ্চার ১০টি অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা মিছিল করে সভাস্থলে পৌঁছান। মিছিলে দুইটি ব্যানার বিশেষ গুরুত্ব পায়—
-
একটিতে লেখা ছিল: "সেনাবাহিনীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও অপারেশন সিঁদুর নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হোক"
-
অন্যটিতে লেখা ছিল: "ওবিসি সংরক্ষণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ"
🎤 বক্তব্যে হুঙ্কার: “সুজয় নামটাই যথেষ্ট!”
সভার মঞ্চে উঠে সুজয় ব্যানার্জী বলেন,
"এই সভা কোনও নেতার ডাকে নয়। আমি একজন কর্মী। আর কর্মীদের ডাকে কর্মীরাই এসেছে।"
তাঁর বক্তব্যে ছিল বেশ কয়েকটি চমকপ্রদ মন্তব্য:
-
"সুজয় তৃণমূলের ব্র্যান্ড নেম"
-
"দলকে আমি বাঁচাব বলে মমতা ব্যানার্জীকে কথা দিয়েছি"
-
"কর্মীদের পাশে না থাকলে কেউ নেতা নয়"
🚫 হুইপ-সাসপেন্ডের হুমকির কড়া জবাব
তাঁর অভিযোগ, কিছু নেতা কর্মীদের হুইপ জারি করে সভায় আসতে বাধা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বলেন—
"দম থাকলে সাসপেন্ড করে দেখাক। কর্মীরা এসেছে কারণ তারা জানে কে তাদের পাশে থাকে।"
🧎♂️ অতীত সম্পর্কের ইঙ্গিত: সৌমেন প্রসঙ্গ
সৌমেন বেলথরিয়া প্রসঙ্গে সুজয় জানান,
"জেলা সভাপতি হবার পর আমার বাড়ি এসে পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিল। তখন যেখানে যেতে বলেছে, গেছি।"
কিন্তু বর্তমান জেলা সভাপতি রাজীব লোচন সোরেন-এর আমলে তাঁকে কোন কর্মসূচিতে ডাকাও হয়নি।
📅 ২০২৬ নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী 🤔
"২০২৬ নির্বাচনে কী হবে, তা শান্তি মাহাত বা রাজীব সোরেন বলতে পারবেন" — বললেন সুজয় ব্যানার্জী।
এ বক্তব্যে তিনি নিজের নির্লিপ্ততা ও দলের নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
🤝 কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতের বিস্ফোরক মন্তব্য
সভায় বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ও জেলা সম্পাদক কৃষ্ণচন্দ্র মাহাত। তিনি বলেন—
"দলের জন্মলগ্ন থেকে আছি। ঘরের ধান-চাল বিক্রি করে কর্মীদের সাহায্য করেছি। এখন যারা পদে আছে তারা শুধু ভাগ চাইছে, টাকা কামাচ্ছে।"
তিনি দলীয় দুর্নীতি, কাটমানি, এবং চাকরি বাণিজ্যের বিরুদ্ধেও মুখ খোলেন।
🚫 পাল্টা প্রতিক্রিয়া: অশোক মাহাতের বক্তব্য
পুঞ্চা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অশোক মাহাত সুজয়ের মন্তব্যকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন—
"এই সভা দলীয় নয়। কারো ব্যক্তিগত মিটিং হলে আমি কেন যাব? কিছু লোক দলবিরোধী কাজ করছে, তারাই সভায় ছিল।"
তিনি সুজয় ব্যানার্জীর কথাবার্তাকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
🔚 উপসংহার
সুজয় ব্যানার্জীর এই সভা তৃণমূলের অন্তঃকলহ ও নেতৃত্বের টানাপোড়েনকে স্পষ্টভাবে সামনে নিয়ে এসেছে। পুঞ্চা ব্লকে কে দলের প্রকৃত নেতা, তা নিয়ে যে সংঘর্ষ চলছে — এই সভা তারই প্রতিচ্ছবি।