পুরুলিয়ায় বামেদের ডাকা ধর্মঘটে উত্তাল জনজীবন।
🔴বামপন্থী দলগুলির ডাকা সর্বভারতীয় ধর্মঘটে পুরুলিয়া জেলার নানা প্রান্তে জনজীবনে দেখা গেলো মিশ্র প্রভাব। ঝালদা, বলরামপুর, মানবাজার, কাশীপুর সহ একাধিক জায়গায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি। জানুন বিস্তারিত।
🗞️পুরুলিয়ায় বামেদের ডাকা ধর্মঘটে কোথায় কেমন প্রভাব পড়ল?
📢 বামেদের ডাকা সর্বভারতীয় ধর্মঘটে বুধবার উত্তাল হয়ে উঠল পুরুলিয়া জেলার জনজীবন।
১০০ দিনের কাজ পুনরায় চালু, শ্রম কোড বাতিল, সম কাজে সম বেতন—এই দাবিগুলিকে সামনে রেখে দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বামপন্থী দলগুলি। এই ধর্মঘটের ঢেউ আছড়ে পড়েছে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহরাঞ্চল পর্যন্ত।
🚍 যান চলাচলে বড়সড় প্রভাব:
বেসরকারি বাস পরিষেবা পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায় এদিন। সরকারি বাস কিছু নির্দিষ্ট রুটে চললেও, তা ছিল অপ্রতুল। ফলে যাত্রীদের পড়তে হয় ব্যাপক সমস্যায়। শহরের এক বাস যাত্রী জানান,
"আগে থেকে জানলে হয়তো রওনা দিতামই না। এমন হঠাৎ করে সব বন্ধ হয়ে যাবে ভাবিনি।" 😟
🏬 দোকানপাট খোলার হালচাল:
পুরুলিয়া শহরে বেশ কিছু দোকান খোলা থাকলেও, শহরতলি ও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ধর্মঘটের প্রভাব ছিল বেশি।
📌 ঝালদা, মানবাজার, সাঁতুড়ি, পারবেলিয়া—এই সব এলাকায় দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ থাকে।
⚠️ ঝালদা ও বলরামপুরে উত্তেজনা ছড়াল:
ঝালদা শহরে পুলিশের সঙ্গে সিপিএম নেতা-কর্মীদের মধ্যে শুরু হয় বচসা। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ এবং বাম কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির মতো ঘটনাও ঘটে বলে স্থানীয়রা জানান।
📍 বলরামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেও পরিস্থিতি ছিল রীতিমতো টানটান। পুলিশ ও সিপিএম কর্মীদের মধ্যে প্রবল বাকবিতণ্ডা হয়। সিপিএমের একটি রোড ব্লক কার্যক্রম ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছায়।
🛑 ঘটনার চরম পর্যায়ে, কান্টাডি মোড়ে পুলিশ সদস্যরা প্রায় ঘেরাও হয়ে পড়েন বাম কর্মীদের দ্বারা।
🛒 মানবাজার, সাঁতুড়ি, পারবেলিয়া—পুরোপুরি স্তব্ধ:
এই এলাকাগুলিতে ধর্মঘট ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দোকানপাট ছিল প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ, রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচলও ছিল না বললেই চলে।
👉 সাঁতুড়ির কৃষ্ণপুর বাজার এবং নিতুড়িয়ার পারবেলিয়া বাজার পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
🏙️ আদ্রা, রঘুনাথপুর, কাশীপুর—মিশ্র প্রভাব:
এইসব এলাকায় কিছু দোকান খোলা থাকলেও, অনেক ব্যবসায়ীই ধর্মঘটের সমর্থনে তাদের দোকান বন্ধ রাখেন। স্থানীয় বাজারে জনসাধারণের ভিড় ছিল কম।
🚆 রেল পরিষেবা ছিল স্বাভাবিক:
জেলায় ধর্মঘটের দিন রেল অবরোধের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ট্রেন চলাচল ছিল যথারীতি। তবে ধর্মঘটের ফলে স্টেশনগুলিতে যাত্রী সংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে কম।
🗣️ সিপিএমের জেলা সম্পাদকের দাবি:
সিপিএম দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় দাবি করেন,
"পুরুলিয়া জেলায় ধর্মঘট ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে। সাধারণ মানুষ নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন।"
তিনি আরও বলেন,
"জনগণের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে।" ✊
📸 স্থানীয়দের চোখে ধর্মঘট:
অনেকেই জানান, এই ধর্মঘট শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নয়, বরং জনগণের ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ।
এক কৃষক বলেন,
"১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকায় আমরা রোজগার হারাচ্ছি। সরকার যদি না শোনে, আমরা প্রতিবাদ করতেই বাধ্য হবো।"
✅ উপসংহার:
পুরুলিয়া জেলায় ধর্মঘটের প্রভাব নিঃসন্দেহে বড়সড় ছিল। শহরাঞ্চলে তুলনামূলকভাবে কম প্রভাব পড়লেও, গ্রামীণ অঞ্চলগুলোতে তা ব্যাপকভাবে অনুভূত হয়েছে।
এই ধর্মঘট যেন শুধুই একদিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি না হয়ে ওঠে—বরং শ্রমজীবী মানুষের দীর্ঘদিনের দাবিগুলোর প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা হয়ে উঠুক, এমনটাই প্রত্যাশা জনসাধারণের।
🔚 শেষ কথা:
📅 আগামী দিনে এই ধরণের ধর্মঘট আরও বড় আকার নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সরকার কি এবার শ্রমজীবী মানুষের কণ্ঠস্বর শুনবে?