পুরুলিয়ার ৯টি আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিপাকে তৃণমূলের এজেন্সি এবিপ্যাক!
২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরুলিয়ার ৯টি আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিপাকে তৃণমূলের রাজনৈতিক এজেন্সি এবিপ্যাক। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও এলাকা ভিত্তিক দাবিদাওয়া তৈরি করেছে জটিলতা।
অভিষেক ব্যানার্জী ভবিষ্যত বাণী করেছেন বিজেপি 2026 বিধানসভা নির্বাচনে ৫০টি আসনও পার করতে পারবে না। ভবিষ্যতবাণী সঠিক করতে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে তৃণমূলের প্রার্থী খোঁজার কাজ।
প্রত্যেকটি বিধানসভায় খোঁজ চলছে কাকে প্রার্থী করলে অনায়াস জয় আসবে ঘাসফুলের। প্রার্থী খুঁজতে গিয়ে নাজেহাল তৃণমূল দলের এজেন্সি এবিপ্যাক। পুরুলিয়া জেলার ৯টি আসনে প্রার্থী খুঁজতে হিমসিম খাচ্ছে এজেন্সী।
পুরুলিয়া বিধানসভা আসনে এবার প্রার্থী হতে চাইছেন পুরুলিয়া পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলার। শুধু শহর থেকে প্রার্থীর দাবীদার সংখ্যা ৩০জনের বেশী।
পাশাপাশি পুরুলিয়া ২নং ব্লকের নেতাদের কথা শহর। হারিয়েছে দলকে। লীড দিয়েছি আমরা এবার প্রার্থী করা হোক ২নং ব্লক এলাকা থেকে।
শহর সম্পর্কে তাদের অভিমত দুর্নীতির কারণে ফল খারাপ হচ্ছে শহরে। ভুগতে হচ্ছে গোটা বিধানসভা এলাকার মানুষকে।
বলরামপুরের নেতাদের দাবী এবার প্রার্থী করা হোক বলরামপুর থেকে। প্রয়োজনে পুরুষ বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হোক কোন মহিলাকে। কাশীপুর বিধানসভার পরিস্থিতি বেশ জটিল।
এখানে দাবী উঠেছে কোন এসসি,এসটি কিংবা ওবিসি থেকে প্রার্থী করা হোক। পাশাপাশি এই বিধানসভারই হুড়া ব্লক নেতৃত্বের দাবী,কাশীপুর বিধানসভা নির্বাচনে হুড়া ব্লক থাকে নির্ণায়ক ভূমিকায়।
যে কারনে এবার হুড়া থেকে করা হোক প্রার্থী।হুড়া ব্লককে বরাবর সৎমায়ের সন্তানের মতো দেখা হবে কেন?
কাশীপুর থেকে প্রার্থী করে পুনর্বার হারতে নারাজ হুড়া ব্লক নেতৃত্ব। সমস্যা গভীর রঘুনাথপুর বিধানসভা আসনেও। এখানে গোষ্ঠী অনেকগুলি।
তবে বড় দুটির একটি পূর্ণচন্দ্র বাউরী দ্বিতীয়টি হাজারি বাউরী। দুই গোষ্ঠীর বিবাদের কারনে গতবার হাতছাড়া হয়েছে রঘুনাথপুর আসন।দাবী উঠেছে সাঁতুড়ি থেকে প্রার্থী করার। রঘুনাথপুর পুরসভার কোন্দল সমস্যায় ফেলেছে দলকে।
এসব থেকে বাঁচতে দলের একটা অংশ চাইছেন মহিলা প্রার্থী হোক,আরেকটা অংশ চাইছে এক ব্যবসায়ীকে প্রার্থী করতে। পাড়া বিধানসভা এলাকায় প্রার্থী করা হোক রঘুনাথপুর ২নং ব্লক থেকে।পাড়া থেকে দাবী উঠেছে সংখ্যালঘু প্রার্থীর।
কারণ এই বিধানসভায় সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা যথেষ্ট বেশী। আবার একটা গোষ্ঠী চাইছে উমাপদ বাউরীকে প্রাথী করা হোক। জয়পুর আসন নিয়ে সমস্যা রয়েছে।
বেশীর ভাগের দাবী স্বচ্ছ ভাবমূর্তির স্থানীয় কাউকে করা হোক প্রাথী, যার নামে এখনও পর্যন্ত কোন দুর্নীতির ছোয়া লাগেনি।
বাঘমুন্ডি আসনের বর্তমান বিধায়ক সম্পর্কে দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের অভিযোগ,বিধায়ক এই এলাকায় থাকেন না। আসেন না। ফোন করলে পাওয়া যায় না।
এই বিধানসভায় নতুন মুখ আনার জন্য জোরালো দাবী করা হয়েছে। বান্দোয়ান বিধানসভা রয়েছে তৃণমূলের দখলে।
নতুন জেলা সভাপতি এখানের বিধায়ক।তাই বান্দোয়ান ব্লক থেকে তেমন অভিযোগ শোনা না গেলেও মানবাজার ২নং ব্লক থেকে দাবী উঠেছে প্রার্থী বদল করার।
সব থেকে জটিল সমস্যা মানবাজার আসন ঘিরে। বর্তমান বিধায়ক সন্ধ্যারানী টুডুর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর।
পুঞ্চা ব্লক এলাকার নেতা ও কর্মীদের কথা উনি বিয়ে বাড়ীর অনুষ্ঠান ছাড়া বাকী কোন বিষয় নিয়ে এলাকায় আসেন না।
পার্টি অফিসে বসে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত করেন না।ওনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু মানুষের। অনেকে তো তার বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র চালাবার অভিযোগ পর্যন্ত করেছেন।
সন্ধ্যারানী টুডুর বিরুদ্ধে দলের বেশ কিছু নেতা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে পর্যন্ত চিঠি দিয়েছেন। অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের দাবী মানবাজার আসন জিততে হলে বদল করতে হবে প্রার্থী।
দলের বর্ষীয়ান নেতা সুজয় ব্যানার্জী বলেন,কয়েক দিন আগে দলের সংগঠন মজবুত করতে ৩ হাজার লোক নিয়ে মিছিল করেছি।
মানবাজারের বিধায়ক ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার নাম করে সভা করলেন মানবাজারে আমাদের বাদ দিয়ে।
কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতর মত নেতাকে ডাকেন নি। সন্ধ্যারানীর প্রতি রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সুজয় ব্যানার্জী বলেন,আমাদের বাদ দিয়ে উনি জিততে পারবেন তো?