বিরোধীদলের প্রচারে দিশাহারা তৃণমূল কংগ্রেস খুঁজছে পরিত্রানের পথ।

বিরোধী দলের জোর প্রচারে ব্যাকফুটে তৃণমূল কংগ্রেস। সংগঠন ভাঙনের আশঙ্কায় রঘুনাথপুর থেকে শুরু করে জেলায় চলছে চাপা ক্ষোভ ও অশান্তি। নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রীতিমতো বিপাকে শাসকদল।

birodhidoler prochare dishahara trinamool congress

যেমন দুয়ারে সরকারে কোনো কাজ হয়না। দিদিকে বলে কোনো লাভ হয়নি। তোমার নিশানা উন্নয়নের ঠিকানা ঘরে ঘরে বিলি করতে গিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মানুষ। অভিষেকের নিঃশব্দ বিপ্লব শুরুই হয়নি। 

তৃণমূলের চলছে শুধু নেতায় নেতায় কামড়াকামড়ি। একজন কোন মন্তব্য করলে সঙ্গে সঙ্গে চলে আসছে পাল্টা ব্যঙ্গাত্মক উত্তর। পরিস্থিতি বেশ ঘোরালো। 

জেলার অবস্থা বুঝে বুধবার বসলো জেলা কমিটির বৈঠক। সবাইকে দেওয়া হল নির্দেশ। কেউ মুখ খুলবেন না।আলটপকা মন্তব্য করবেন না। 

দল বিরোধী কথা বললে নেওয়া হবে ব্যবস্থা। এমন হুমকির পরেও তৃণমূল দলে সংগঠন বাঁচাতে লড়াই ছেড়ে সবাইকে একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়বে এমন সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। 

রঘুনাথপুর বিধানসভার নেতা হাজারী বাউরী ত্রিপাল বিলি করতে গিয়ে আগাম পোষ্ট করলেন,বাজারে গেরুয়া ছাড়া অন্য কোন রঙের ত্রিপাল পাওয়া যাচ্ছে না। 

বাধ্য হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমি গেরুয়া রঙের ত্রিপল বিলি করছি বলে আমাকে কেউ বিজেপির লোক বলে ভাববেন না।

দলের কোন কর্মী বা নেতা কোন অনুষ্ঠান ঘিরে দলের প্রচারে হোডিং টাঙ্গাতে গিয়ে পড়ছেন দলের নেতা-কর্মীদের সমালোচনায়। 

রথ যাত্রার পর মহরমের শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করেও চলছে ব্যাপক খেয়োখেয়ি।মোদ্দা অবস্থা তৃণমূলের এখন কেউ কাউকে সহ্য করতে পারছেন না। 

কেউ কারোর কথা শুনে চলতে নারাজ। দলে এখন লাগাম ছাড়া অবস্থা। বহিস্কারের হুমকি দিয়েও হচ্ছে না কাজ।

সবার লক্ষ্য মোটা অর্থ পকেটে ভরার। সদ্য নির্বাচিত জেলা তৃণমূল দলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাত সত্যতা স্বীকার করে বলেন,জনসংযোগ কমে যাচ্ছে। 

কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের হৃদ্যতা নেই। বিরোধীরা সর্বত্র তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোরদার প্রচারে নেমে শুধু পড়েনি,মানুষের মনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাব তৈরী করতে শুরু করেছে। 

যেখানে বিধানসভায় শূন্য থেকেও কংগ্রেস, সিপিএম দল মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তখন আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা বসে আছে হাত গুটিয়ে।

মমতা ব্যানার্জীর জনমুখী প্রকল্পের কথা বোঝাবার চেষ্টাই করছে না। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে | ২১ জুলাইয়ের সভাকে সামনে রেখে সকলকে এক করার জন্য বুধবার আয়োজিত হল জেলা কমিটির সভা। 

গতবারের থেকে আরও বেশী সংখ্যক মানুষকে নিয়ে ধর্মতলার সভায় যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

কংগ্রেস দলের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাত বলেন,তৃণমূলের ১৪বছর শাসনে পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে চুরি,খুন,নারী ধর্ষণ,সরকারী অর্থ লুঠ। 

ভাল কিছু হয় কই,যে ওরা মানুষকে বোঝাবে। কর্মীরা কাজ করবে কেন। চোখের সামনে দেখছে ছেঁড়া পায়জামা পরা বিড়ি খাওয়া নেতা আজ ১০হাজার টাকা দামের জিনস প্যান্ট, টিশার্ট পরছে। 

৮হাজার টাকা দামের জুতা পরে ২০লক্ষ টাকার স্করপিওতে চাপছে।কর্মীরা আঙ্গুল চুষছে। ওরা । পাশে থাকবে কেন। সিপিএম দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় জানান, স্কুলে শিক্ষক নাই। 

গ্রামে রাস্তা নাই। জল পান করার জন্য জল নাই। এসব তো মানুষ উপলব্ধি করছেন। আমরা শুধু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি। 

১০০ দিনের কাজ নিয়ে হাইকোর্টে আমরাই গিয়েছিলাম। আদালতের রায়ে আমরা কেন্দ্র সরকারকে বাধ্য করেছি এরাজ্যে ১০০ দিনের কাজ চালু করতে। 

নাচ করছে ওরা। বিজেপি দলের জেলা সভাপতি শঙ্কর মাহাত বলেন,তৃণমূল জনসংযোগে যাবে কি করে।মানুষের কাছে গেলে তারা প্রধানমন্ত্রী আবাস চাইবে। 

ঘরে পাণীয় জলের কানেকশন চাইবে। গ্রামের রাস্তা চাইবে।বেকার ছেলে মেয়েদের দেখিয়ে তাদের চাকরি চাইবে।

কর্মীদের মুখ বন্ধ থাকবে।মানুষের কথার উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নাই। তাই কর্মীরা বার হচ্ছে না। কাটমানি খাওয়া নেতারা কর্মীদের কাছে ডাকার সাহস টুকু করতে পারে না পাছে কর্মীরা খারাপ কোন মন্তব্য করে ফেলে। 

তৃণমূল দল উন্নয়নে যে ব্যর্থ তার সব থেকে বড় প্রমাণ কয়েকদিন আগে আড়ষা থানার ৩টি গ্রামের কয়েকশ মহিলা জেলা সমাহর্তার দপ্তরে এসে রাস্তার দাবীতে বিক্ষোভ দেখালেন। 

২০২৬ - এ তৃণমূল শূন্য হবে রাজ্য বিধানসভায়। মানুষ আওয়াজ তুলেছেন,কাটমানি খাওয়া,খুনী,ধর্ষক তৃণমূলের আর নাই দরকার।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url