তৃণমূলের আঁচল প্রচারের পাল্টা রণকৌশল কংগ্রেসের।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে পুড়ুলিয়ার ঝালদা এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে।
জনমুখী প্রকল্পকে সামনে রেখে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যেমন ‘আঁচল’ কর্মসূচির মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে প্রচার, তেমনি পাল্টা কৌশলে কংগ্রেস দলও মহিলা কর্মীদের হাত ধরেই নেমেছে প্রচারে।
রাজনৈতিক প্রচারে এবার মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে স্থানীয় আশা, অঙ্গনওয়াড়ী ও মহিলা কর্মীদের।
তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল তুলে ধরতে মহিলা তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার চালাচ্ছেন।
তাঁদের বক্তব্য, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আবারও জনগণের সমর্থন প্রয়োজন।
অন্যদিকে কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল সরকারের প্রকল্পগুলি আসলে মানুষকে “বোকা বানানোর ফাঁদ”। মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পের মাধ্যমে ভাতা দিয়ে প্রতিবাদকে স্তব্ধ করতে চাইছেন—এমনটাই দাবি করেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাত।
📍 কংগ্রেসের পাল্টা প্রচার:
রবিবার ঝালদার সত্যভামা বিদ্যাপীঠে এক বিশেষ সভার আয়োজন করা হয় কংগ্রেসের তরফে। উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি নেপাল মাহাত ও ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এই সভায় ঝালদা পুরসভা ও ব্লকের বিভিন্ন এলাকার আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী ও মহিলা কংগ্রেস কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
নেপাল মাহাত সভায় অভিযোগ তোলেন,
-
বহু স্কুলে নেই শিক্ষক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পাঠদান বন্ধ।
-
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির পরিস্থিতি বেহাল; প্রাণহানির ভয়ে গাছতলায় পড়ানো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের।
-
স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স, ফলে গ্রামবাসীরা চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত।
-
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আশা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি।
-
অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রগুলি বেহাল দশায় চলছে, রাস্তার ধারে রান্না হচ্ছে শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য।
তাঁর মন্তব্য, “তৃণমূল সরকার প্রকৃত উন্নয়নে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই বাস্তব চিত্র সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার কাজ করছেন কংগ্রেসের মহিলা কর্মীরা।”
🔍 রাজনৈতিক কৌশলের রূপরেখা:
এই প্রচার কার্যক্রমে দেখা যাচ্ছে যে উভয় পক্ষই মহিলা ভোটার ও কর্মীদের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
তৃণমূল যেখানে মহিলা ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে নিজস্ব প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরছে, সেখানে কংগ্রেস চাইছে এই প্রকল্পগুলোর পিছনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি অসন্তোষ বাড়াতে।
📌 উপসংহার:
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝালদা-সহ গোটা পুরুলিয়া জেলায় যে নারী-কেন্দ্রিক প্রচার কৌশল প্রাধান্য পাচ্ছে, তা স্পষ্ট।
তৃণমূলের জনমুখী প্রকল্প বনাম কংগ্রেসের দুর্নীতির অভিযোগ—এই দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে এখনই শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক লড়াই। সময় বলবে, সাধারণ মানুষ কোন পক্ষকে সমর্থন করবেন।