প্রসাদ ও সিঁদুরে ভুলিয়ে ভোট টানার খেলায় নেমেছে তৃণমূল ও বিজেপি।
📰পশ্চিমবঙ্গে ভোটের আগে প্রসাদ ও সিঁদুর বিলির মাধ্যমে ধর্মীয় আবেগে ভোট টানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল ও বিজেপি।
অথচ সাধারণ মানুষ ভুগছে বেকারত্ব, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দুর্নীতির জ্বালায়। বিস্তারিত প্রতিবেদন পড়ুন।🛕🗳️
🌟 ভোটের আগে ধর্মীয় আবেগে আগুন 🔥
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আর বিশেষ দেরি নেই। চারিদিকে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক উত্তাপ। রাস্তায়, মোড়ে, চায়ের দোকানে — একটাই আলোচনা, কে আসছে আবার ক্ষমতায়?
এই উত্তাপের মাঝেই রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি, তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, ধর্মীয় আবেগকে হাতিয়ার করে ভোট টানার কৌশল নিয়েছে। কেউ বিলি করছে প্রসাদ, তো কেউ সিঁদুর — উদ্দেশ্য একটাই, ভোটারদের মন জয় করা। 🎯
🛕 তৃণমূলের প্রসাদ-বিতরণ পরিকল্পনা
দীঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্বোধনের পরে প্রায় এক মাস কেটে গেলেও হঠাৎ করে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে সেই মন্দিরের প্রসাদ বিতরণ। লক্ষ্য? ভোটারদের “আর্শীবাদ” লাভ।
তৃণমূলের দাবি অনুযায়ী, ধর্মীয় আস্থার জায়গা থেকে মানুষের কাছে পৌঁছানোই তাদের উদ্দেশ্য। তবে বিরোধীরা বলছে ভিন্ন কথা — এই পরিকল্পনার পেছনে আছে ভোট টানার নিঃসন্দেহ চেষ্টা।
🟥 বিজেপির অপারেশন সিঁদুর
অন্যদিকে বিজেপি নাম দিয়েছে "অপারেশন সিঁদুর"। সেনাবাহিনীর কৃতিত্বকে নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার বানিয়ে তারা ঘরে ঘরে বিলি করছে সিঁদুর। এতে ধর্মীয় আবেগের পাশাপাশি ‘দেশপ্রেম’কেও সামনে আনা হচ্ছে।
📢 জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাত এই প্রসঙ্গে বলেন:
“অপারেশন সিঁদুর সেনাবাহিনীর সাফল্য। বিজেপি সেই সাফল্য নিজের নামে চালিয়ে ভোটারদের ভুলাচ্ছে। এটা একপ্রকার প্রতারণা।”
🧂 প্রসাদ বিলির পেছনে দুর্নীতির গন্ধ?
প্রসাদের নামে লাখ লাখ মিষ্টি বিলির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতদিন পরে হঠাৎ কেন? প্রশ্ন উঠছে — এই বিলির আড়ালে কি দুর্নীতির গন্ধ লুকিয়ে আছে?
🎙️ সিপিএম জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন,
“রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় সরকার মেতেছে লোক দেখানো খেলায়। একদিকে সিঁদুর, অন্যদিকে প্রসাদ। প্রকৃত সমস্যাগুলো ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
⚠️ বাস্তব চিত্র: কাজ নেই, স্বাস্থ্য নেই, শিক্ষা নেই 😞
এদিকে রাজ্যের বাস্তব পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
-
পুরুলিয়ার লক্ষাধিক যুবক কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছে অন্য রাজ্যে।
-
স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে তালা ঝুলছে।
-
স্কুলে শিক্ষক না থাকায় আগেভাগেই গরমের ছুটি ঘোষণা।
-
গ্রামীণ রাস্তা গুলো এখনও বহু জায়গায় অনুন্নত। মানুষ নিজেরা চাঁদা তুলে রাস্তা বানাচ্ছে।
-
জলের জন্য পথ অবরোধ প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
📢 মানুষ প্রশ্ন তুলছে — “এত সমস্যা থাকতে সিঁদুর আর প্রসাদে কি পেট ভরবে?”
🎓 শিক্ষাজগতের প্রতিক্রিয়া
👨🏫 রাধামাধব হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার চন্দ্র বলেন,
“স্বাধীনতার এত বছর পরেও মৌলিক চাহিদা পূরণ হয়নি। ধর্মের নামে মানুষকে ভুলানো যাবে না।”
👩🏫 নিস্তারিনী কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ ইন্দ্রানী দেব মন্তব্য করেন,
“ধর্ম নিয়ে রাজনীতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশপ্রেম বোঝাতে হলে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে হবে।”
📚 কাশীপুর মাইকেল মধুসূদন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ডঃ ক্ষীরোদচন্দ্র মাহাত বলেন,
“সরকার মানুষের ভোটে ক্ষমতায় আসে জীবন-জীবিকার উন্নতির জন্য, ধর্ম নিয়ে বুজরুকি করার জন্য নয়।”
🙏 ধর্ম না কি উন্নয়ন?
মানুষ এখন বুঝতে পারছে, ধর্মীয় আবেগ ব্যবহার করে ভোটে জেতার খেলা চলছে। কিন্তু প্রকৃত চাহিদা — কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা, পানীয় জল — এই বিষয়গুলো রয়ে যাচ্ছে উপেক্ষিত।
⛔ একদিকে মন্দির উদ্বোধন আর প্রসাদ বিলি, অন্যদিকে সিঁদুরের নামে ‘দেশপ্রেম’ — মানুষ বলছে, “এগুলো দিয়ে আর চলবে না।”
🔚 উপসংহার
ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ধর্ম যেন এক নতুন ইলেকটোরাল অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখন চায় বাস্তব পরিবর্তন। তারা বলছে —
“সিঁদুর বা প্রসাদ নয়, চাই রুটি-কাপড়-বাসস্থান। চাই সম্মানজনক জীবন।” 🍚👕🏠