পহেলগাঁও হত্যার বদলা — এক ন্যায্য প্রতিশোধের গল্প।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-এর বৈষ্ণব পার্কে ঘটে যায় এক বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড। পাকিস্তানপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী The Resistance Front (TRF) ধর্ম জিজ্ঞেস করে ২৫ জন ভারতীয় ও ১ জন নেপালি পর্যটককে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করে।
এতটাই নির্মম ছিল এই হামলা যে গোটা দেশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বর্বরতার বদলা নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং সেই প্রতিশোধ কতটা কার্যকর হতে পারে, তা পুরো বিশ্ব খুব দ্রুতই বুঝে যায়।
জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তান তাদের পুরনো কৌশলে ফিরে যায়—পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিতে থাকে। তারা ধরে নিয়েছিল, ভারত অতীতে যেমন সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, এবারও তেমনই কিছু হবে।
কিন্তু এইবার ভারতীয় বাহিনী তাদের ভুল প্রমাণ করে দেয়। ৭ মে রাতে ভারতীয় সেনা, বায়ুসেনা ও নৌবাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে টার্গেটেড স্ট্রাইক চালায়।
এই অপারেশনে লস্কর-ই-তৈবা, জৈশ-ই-মহম্মদ ও হিজবুল মুজাহিদিনের সদর দপ্তর ধ্বংস করা হয়। মাসুদ আজহারের পরিবারে ১৪ জন সদস্য নিহত হন।
এতটাই গভীরে ও নির্ভুলভাবে আঘাত হানা হয়েছিল যে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। বিস্ময়ে হতবাক হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং সেনাপ্রধান।
এই প্রতিশোধের পর পাকিস্তান পাল্টা হামলা শুরু করে ৮ মে থেকে। ভারতীয় সেনা শিবির ও সাধারণ নাগরিকদের আবাসস্থলে বোমাবর্ষণ শুরু হয়।
পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছায় যে ৮, ৯ ও ১০ মে—ভারতীয় বাহিনী ইসলামাবাদ, লাহোর, করাচি সহ একাধিক শহরে পাল্টা হামলা চালায়। ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি যেখানে শত্রুর ড্রোন ও মিসাইল থামাতে সক্ষম, পাকিস্তান তা পারছিল না।
এই অবস্থা চরমে পৌঁছালে পাকিস্তানের অনুরোধে আমেরিকা মধ্যস্থতায় আসে এবং ১০ মে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়।
তবে যুদ্ধবিরতির অর্থ এই নয় যে ভারত দুর্বলতা দেখিয়েছে। বরং, যুদ্ধের মাঝেই ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়—সিন্ধু জলচুক্তি ও ভিসা সংক্রান্ত ছাড়পত্র বাতিল থাকবে, এবং ভবিষ্যতে যেকোনো জঙ্গি হামলাকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা বলে বিবেচনা করা হবে।
ভারতের এই অবস্থান কেবল এক প্রতিক্রিয়া নয়, এক দীর্ঘমেয়াদী নীতি বদলের ইঙ্গিত। পাকিস্তানের কাশ্মীরপ্রীতির পিছনে অন্যতম বড় কারণ হলো জলসম্পদ—বিশেষত সিন্ধু নদী।
সেই কারণেই ভারতের উচিত এই জলচুক্তিকে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা। যেকোনো জঙ্গি কার্যকলাপের মোকাবিলায় এটি হবে এক শক্তিশালী প্রতিরোধ।
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড ছিল এক মানবতাবিরোধী অপরাধ। এর প্রতিশোধ ছিল ন্যায়সঙ্গত, প্রয়োজনীয় এবং সময়োপযোগী।
তবে এই প্রতিশোধই যেন শেষ না হয়—তার পরেও যেন থেকে যায় ভারতের কঠোর অবস্থান। কারণ ইতিহাস বলে, দুর্বলতা দেখালে সন্ত্রাস বারবার ফিরে আসে।