গৃহহীন, রেশনহীন শবর পরিবার ঠাঁই নিয়েছে যাত্রী নিবাসে – উন্নয়নের দাবির মাঝে প্রকৃত চিত্র ফাঁস।
রাজ্য সরকারের ‘উন্নয়নের গল্প’-র মাঝে বেরিয়ে এলো এক করুণ বাস্তব। পুরুলিয়া জেলার মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের পেঁচাড়া গ্রামের এক শবর জনজাতি পরিবার আজ গৃহহীন ও রেশনহীন অবস্থায় বসবাস করছে যাত্রী নিবাসে।
নিজেদের বসতঘর বসবাসের অযোগ্য হওয়ায় এবং কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা না পাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছে পরিত্যক্ত যাত্রী নিবাসে।
ভোটে শবর ও তার স্ত্রী রাধি শবর – এই জনজাতি পরিবারের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিটি গ্রামে খাদ্য দপ্তরকে গিয়ে রেশন বঞ্চিত পরিবার খুঁজে বের করে তাদের রেশন কার্ড প্রদান করার কথা থাকলেও বাস্তবে সেই ঘোষণা যে কতটা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পরিবারটি এখনও পর্যন্ত পায়নি কোনও রেশন কার্ড, পায়নি কোনও সরকারি ভাতা, এমনকি ‘বাংলার বাড়ি’ বা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতাতেও জোটেনি একটি নিরাপদ আশ্রয়।
আধার কার্ড ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের অভাবকে কারণ দেখিয়ে পরিবারটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বারবার। ঘরের ছাউনি মেরামতির জন্য বহুবার পঞ্চায়েতে দরবার করেও মেলেনি ত্রিপালের ব্যবস্থা পর্যন্ত।
অবশেষে, একমাত্র উপায় হিসেবে পেঁচাড়া গ্রামের কাছে ফাঁকা পড়ে থাকা যাত্রী নিবাসেই আশ্রয় নিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে এলাকার বিজেপি নেত্রী ময়না মুর্মু তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রতিদিন নতুন নতুন প্রকল্পের ঘোষণা দিয়ে মানুষের চোখে ধুলো দিচ্ছেন। প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে না, সেটা উনিও জানেন।”
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, উন্নয়নের প্রচারে যতই সাফল্যের দাবি উঠুক না কেন, বাস্তব মাটির টানে এখনও অনেক পরিবার রয়ে গেছে সেই উন্নয়নের বাইরে। প্রশাসনের দৃষ্টি না পড়লে এমন আরও বহু পরিবার থেকে যাবে অন্ধকারে।