রঘুনাথপুর পুরবোর্ড ভাঙা অবৈধ ঘোষণা হাইকোর্টে।
🏛️রঘুনাথপুর পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায়ে ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার। জানুন পুরো ঘটনা বিশদে।⚖️

📚 বিস্তারিত প্রতিবেদন:
📍 রঘুনাথপুরে হাইকোর্টের রায় রাজ্য সরকারের মুখে কালিমা!
⚖️ কলকাতা হাইকোর্ট আবারও একবার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলল। রঘুনাথপুর পুরসভার নির্বাচিত বোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করল আদালত। বিচারপতি কৌশিক চন্দের রায়ে বলা হয়েছে—পুর আইনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে গাফিলতি করেছে রাজ্য।
🏛️ ঘটনার পটভূমি
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গের ১১৪টি পুরসভায় একসঙ্গে নির্বাচন হয়। পুরুলিয়া জেলার তিনটি পুরসভা—পুরুলিয়া, ঝালদা ও রঘুনাথপুরে তৃণমূল কংগ্রেসই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে।
রঘুনাথপুর পুরসভায় মোট ১৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জেতে ৯টি, কংগ্রেস ২টি ও বিজেপি ২টি। পরবর্তীতে বিজেপির এক কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা বেড়ে যায়।
🧨 দলের অন্দরে কোন্দল: বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর বনাম চেয়ারম্যান
দলেরই একাংশের মধ্যে চেয়ারম্যান তরণী বাউরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দলের ৯ কাউন্সিলরের মধ্যে একাধিক জন তাঁর অপসারণ দাবি করে জেলা নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানালেও তা দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকে।
🗓️ ১৪ এপ্রিল ২০২৫-এ বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন রঘুনাথপুর এসডিও এবং জেলা প্রশাসকের কাছে।
🛑 আনুষ্ঠানিক সভা ডাকতে গাফিলতি এবং প্রশাসক বসানো
চেয়ারম্যান ও উপ-চেয়ারম্যান আইন অনুসারে আনুষ্ঠানিক তলবি সভা ডাকেননি। ফলে ১৬ মে তিনজন কাউন্সিলর নিজ উদ্যোগে সভা ডাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু এরই মাঝে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর আচমকা ১৯ মে বোর্ড ভেঙে এসডিও বিবেক পঙ্কজকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করে। তিনি ২০ মে দায়িত্বও গ্রহণ করেন।
🏛️ আইনি লড়াইয়ে বিজেপি কাউন্সিলর
🧑⚖️ বিজেপির কাউন্সিলর দীনেশ শুক্লা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন এবং তাঁর আইনজীবী শমিত ভঞ্জ আদালতে জানান:
-
কাউন্সিলরদের শোকজ করা হয়নি
-
অভিযোগের বিস্তারিত কারণ জানানো হয়নি
-
কাউন্সিলরদের মতামত নেওয়া হয়নি
-
জেলা প্রশাসন কোনো তদন্ত করেনি
📜 বিচারপতির রায়: রাজ্যের ত্রুটি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়
⚖️ বিচারক কৌশিক চন্দ তাঁর রায়ে বলেন—
-
শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়নি কাউন্সিলারদের।
-
অভিযোগের স্বচ্ছ তথ্য জানানো হয়নি।
-
তদন্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
এই সব গাফিলতির ভিত্তিতে আদালত প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রঘুনাথপুরে পুনরায় নির্বাচিত বোর্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
📢 প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই রায় রাজ্য সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। শাসক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, নেতৃত্বের দুর্বলতা এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের অস্বচ্ছতা সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
🔚 উপসংহার
এই রায় আবারও প্রমাণ করল, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনকে এড়িয়ে গিয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিলে তা আদালতে ঠেকেই মুখ থুবড়ে পড়ে। রঘুনাথপুর পুরসভা এখন নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে।
🧠 আপনার মতামত কী?
আপনি কি মনে করেন রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত যথাযথ ছিল? নিচে কমেন্টে জানান আপনার অভিমত। 🗣️👇